প্রতিবছর একবার পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তন করা হয়। রেশমের সুতায় তৈরি উন্নতমানের এ কাপড়ে লেখা থাকে কোরআনের অনেকগুলো আয়াত। আনন্দের বিষয় হলো গিলাফের এসব লিখনিতে একজন বাংলাদেশির হাতের ছাপও রয়েছে। তার নাম শায়খ মুখতার আলম শিকদার।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে তিনি মক্কার গিলাফ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স ফর ম্যানুফ্যাকচারিং দ্য কাবাস কিসওয়াহতে কাজ করছেন। আরবি লিখনশৈলী সুলুস পদ্ধতি অনুসরণ করে তিনি গিলাফের চারপাশে কোরআনের নির্দিষ্ট আয়াতের ক্যালিগ্রাফি করেন। মূলত দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে তিনি ক্যালিগ্রাফি চর্চা করছেন। অতঃপর তিনি এ অনন্য মর্যাদা লাভ করেন।
বিগত সময়ের মতো হিজরি নববর্ষ উপলক্ষে পরিবর্তন হতে যাওয়া কাবার গিলাফে আছে তাঁর ক্যালিগ্রাফি। গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানান তিনি।
২০২১ সালের ১১ নভেম্বর সৌদি আরবের নাগরিকত্ব লাভ করেন মুখতার আলম। সেই সময় বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের এক রাজকীয় নির্দেশনায় বিভিন্ন পেশায় অবদান রাখা বিদেশি কর্মীদের নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন।মূলত তখন থেকেই পবিত্র কাবাঘরের প্রধান ক্যালিগ্রাফার হিসেবে মুখতার আলমের বিষয়টি দেশি ও বিদেশি সব সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। সেই বছরের ১৫ নভেম্বর কালের কণ্ঠে সংবাদটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়।
মুখতার আলম ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার রশীদের ঘোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে বাবার কর্মস্থলের সূত্রে তিনি সৌদি আরব যান। শৈশবের পুরো সময় তিনি পবিত্র মসজিদুল হারামে কাটান এবং সেখানেই কোরআন হিফজ করেন।
এরপর তিনি মক্কার বিখ্যাত উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্পকলা বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরবর্তী সময়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করেন। আরবি লিখনশৈলী নিয়ে তাঁর লেখা বই সৌদি আরবসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। সৌদি আরব ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে তাঁর ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শিত হয়েছে।