তীব্র গরম আর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে সারা দেশের জনজীবন অতিষ্ঠ। তীব্র গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও জ্বালানি সংকটে উৎপাদন বাড়াতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এতে দেশে এখন প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণে চলছে ব্যাপক লোডশেডিং।
রাজধানী ঢাকায় এখন প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা করে লোডশেডিং চলছে। ঢাকার বাইরে পরিস্থিতি আরো খারাপ। গ্রামাঞ্চলে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে বলে গ্রাহকরা জানিয়েছে। গরম আর লোডশেডিং মিলিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের।
মধ্যরাতেও দীর্ঘ সময় লোডশেডিং হওয়ায় মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
বিদ্যুত্সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, গরমের তীব্রতা না কমলে লোডশেডিং পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে। কয়লা সংকটে দেশের সবচেয়ে বড় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট) বন্ধ রয়েছে।দু-এক দিনের মধ্যে বন্ধ হবে দ্বিতীয় ইউনিটও। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চাহিদায় বড় ঘাটতি তৈরি হবে।
বর্তমানে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে বিপিডিবির ঘাটতি তৈরি হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত। এই ঘাটতি পূরণে মধ্যরাতেও চলছে ব্যাপক লোডশেডিং।
সারা দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দায়িত্বে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। সংস্থাটি মূলত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে বিতরণ কম্পানিগুলোকে সরবরাহ করে।
পিজিসিবির ঘণ্টাপ্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন চিত্র বলছে, ২ জুন রাত ১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় গড়ে লোডশেডিং ছিল প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট। পিজিসিবির তথ্যের বাইরে সারা দেশ থেকে গ্রাহকদের ভোগান্তির চিত্র বলছে, লোডশেডিং তিন থেকে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত হচ্ছে।
বিপিডিবির সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার বলেন, ‘লোডশেডিং কিভাবে কমানো যায়, বিষয়টি নিয়ে আমরা সারাক্ষণ কাজ করছি। মনিটরিং কার্যক্রম চলমান।’