বগুড়ার ধুনট উপজেলায় স্বামীর মৃতদেহ দাফন করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মিম খাতুন (১৬) নামে এক নববধূ। মিম উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের আনারপুর গ্রামের কালাম মন্ডলের মেয়ে। মঙ্গলবার ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মিম বাংলা দ্বিতীয়পত্র বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। মিম খাতুন ধুনট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে মানবিক শাখায় পরীক্ষায় অংশ দিচ্ছে।
পরীক্ষা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের চালাপাড়া চৈতারপাড়ার নায়েব আলীর ছেলে নান্নু মিয়া (৩০) ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চকরি করতেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরে ২৮ এপ্রিল পারিবারিক ভাবেই নান্নু মিয়ার সঙ্গে মিম খাতুনের বিয়ে হয়। গত ৩০ এপ্রিল মিম খাতুনের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন স্বামীর সাথে কেন্দ্রে পৌছে বাংলা প্রথমপত্র বিষয়ে পরীক্ষা দেয় মিম। এরপর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে আনারপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে যায়। ওইদিন রাত ৯টার দিকে নবদম্পতি বাবার বাড়িতে একটি কক্ষে একই বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে। রাত দেড়টার দিকে ঘুম থেকে জেগে স্বামীকে বিছানায় খুজে পায়নি।
এসময় পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ঘরের পাশে গাছের সাথে গলায় রশি পেচানো অবস্থায় ন্নানু মিয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখ পায়।
সংবাদ পেয়ে ১ মে সকালের দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নান্নু মিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মো: রবিউল ইসলাম জানান, ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে আমরা মৃত্যুর সঠিক কারণ জানাতে পারব।
আইনী প্রক্রিয়া শেষে নান্না মিয়ার মৃতদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। সোমবার রাতে চালাপাড়া চৈতারপাড়ায় নিজ বাড়িতে নান্নু মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষা শেষে মিম খাতুন জানায়, ওই রাতে একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলাম। কিন্তু কি কারণে আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছে তা সঠিক করে বলতে পারছি না। বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা খুব একটা ভাল হয়নি।