কাপড়ের বড় মার্কেট হিসেবে পরিচিত বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের সাতটি মার্কেটের ৫ হাজারের বেশি দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। রমজানে থাকে জমজমাট, থাকে বিক্রয়কর্মীর হাঁকডাক। সেই চেনাজানা আর হাঁকডাক নেই, আছে উৎকণ্ঠা আর আগুনে পুড়ে যাওয়া স্বপ্নের স্তূপ আর দীর্ঘশ্বাস।
বুধবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে যাওয়া মার্কেটের ভেতরে কেউ ঢুকে নিজের দোকানের কোনো কিছু পান কি না, দেখছেন। কেউ খুঁজছেন টাকার ডেস্ক, কেউ বা দোকানের কাগজপত্র। ফেরিওয়ালারা খুঁজছেন আগুনে পুড়ে যাওয়া ভাঙা লোহা ও টিনের জিনিস।
মল্লিক গার্মেন্টসের শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘ভাই, ফকির হইয়া গেছি। দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, দোকানে ৪০-৪৫ লাখ টাকার মালামাল আর নগদ টাকা কিছুই অবশিষ্ট নেই, আমি কী করব? কোথায় যাব! আমার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। আমার কোথাও যাওয়ার রাস্তা নেই ভাই। সরকার যদি আমাদের জন্য কোনো ব্যবস্থা করে, তাহলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব, না হয় কিছু করার নেই। ভিক্ষা করতে হবে।’
বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের তিনটি দোকানের মালিক আলমগীর হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘তিনটি দোকানের কোনো কিছু নেই, আমি কোথায় যাব? ৭৫ লাখ টাকা ব্যাংকে লোন আছে, এই টাকা আমি কোথা থেকে দেব?’
‘ঈদে ভালো বিক্রির আশায় কোটি টাকার নতুন মাল তুলছিলামরে ভাই। সাতটি দোকান ছিল আমার। সব দোকানেই নতুন মালে ভরা। এখন সব ছাই হয়ে পইড়া আছে। আড়াই কোটি টাকার ঋণ এখন আমি ক্যামনে শোধ দেব। আমি শেষ ভাই, আমি শেষ!’
বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে এভাবেই আর্তনাদ করে মূর্ছা যাচ্ছিলেন নিউ রাজু গার্মেন্টসের মালিক মিজানুর রহমান। লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলায় বাড়ি। ঈদে ভালো ব্যবসা হবে সেই আশায় নতুন কাপড় তুলতে ব্র্যাক ব্যাংকের গুলিস্তান থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। আরও কয়েক লাখ টাকা ধার করেছিলেন আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে। দোকান পুড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন তিনি।