ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস কেনেডি-লুগার ইয়ুথ এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড স্ট্যাডি (ইয়েস) প্রোগ্রাম ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য আবেদনপত্র গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। এ প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশি হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সুযোগ পাবে। আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত আগ্রহী শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবে।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের অর্থায়নে ইয়েস প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশের ৮-১১ গ্রেডে ভালো ফল করা হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের এক শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের জন্য বৃত্তি দেয়াা হয়।
কেনেডি-লুগার ইয়েস প্রোগ্রামের মাধ্যমে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। ইয়েস বৃত্তি একটি মেধাভিত্তিক ও উন্মুক্ত কার্যক্রম। এতে বিনামূল্যে আবেদন করা যাবে। ২০০৪ সাল থেকে তিন শতাধিক বাংলাদেশি হাইস্কুল শিক্ষার্থী ইয়েস কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছে।
যোগ্যতা:
*আবেদনকারীর বয়স ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে হতে হবে।
*বর্তমানে বাংলাদেশি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম, দশম বা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি থাকতে হবে।
*বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি নাগরিকরা আবেদনের জন্য যোগ্য হবে না।
*আবেদনের সময় অবশ্যই ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের নম্বরপত্র/মার্কশিট জমা দিতে হবে। বার্ষিক ফলাফলে গড়ে কমপক্ষে ‘বি’ গ্রেড থাকতে হবে। গত তিন শিক্ষাবর্ষের মধ্যে কোনো শিক্ষাবিরতি বা কোনো শ্রেণির পুনরাবৃত্তি থাকলে আবেদনকারীকে অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে।
*মার্কিন জে-১ ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে (যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা জে-১ ভিসা পাওয়ার অযোগ্য)।
*আবেদনকারী গত পাঁচ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৯০ দিনের অধিক বসবাস বা ভ্রমণ করে থাকলে তাকে অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে।
*আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশে বসবাসকারী স্থায়ী নাগরিক হতে হবে। কেউ দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী বা বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসরত হলে তার আবেদন বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।
*ইংরেজিতে কথা বলা ও লেখাপড়ার জন্য ইংরেজি ভাষায় পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকতে হবে।
*আবেদনকারী প্রার্থীর মা-বাবার যে কেউ অথবা উভয়ই যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বা যুক্তরাষ্ট্র মিশনের বর্তমান কর্মী হতে পারবেন না।
সুযোগ-সুবিধা:
ইয়েস প্রোগ্রামের ব্যয়ভার অর্থাৎ বিমানভাড়া, মার্কিন ভিসা ফি, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা-খাওয়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন এবং মাসিক ১২৫ ডলারের হাতখরচ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্বরাষ্ট্র বিভাগ বহন করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়া এবং আসার বিমানভাড়া; প্রিডিপার্চার ওরিয়েন্টেশনের খরচ, আমেরিকান হোস্ট ফ্যামিলিতে প্লেসমেন্টের খরচ; মাসিক উপবৃত্তি; স্বাস্থ্যবিমা এবং প্রোগ্রামের আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের খরচ অংশগ্রহণকারীকে বহন করতে হবে না। প্রতিটি শিক্ষার্থী একটি আমেরিকান হোস্ট ফ্যামিলির সঙ্গে বসবাস করবে। শিক্ষার্থীকে আমেরিকার যে কোনো অঙ্গরাজ্যে বসবাস করতে হতে পারে, যার ব্যবস্থা আমেরিকান প্লেসমেন্ট সংস্থা করে থাকে। প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা শিক্ষার্থীদের পক্ষে অসম্ভব। এটি প্রোগ্রামের নিয়মাবলির বিরুদ্ধে এবং এই নিয়ম ভঙ্গ করলে শিক্ষার্থী একজন ফেডারেল অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হবে। শিক্ষার্থী পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবে না।
আবেদন ও বাছাইপ্রক্রিয়া:
এ ওয়েবসাইট থেকে বিস্তারিত তথ্য জেনে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রথম শ্রেণির গেজেটেড অফিসার বা স্কুলের কর্মকর্তার কাছ থেকে সত্যায়িত করতে হবে। এরপর সেই কাগজপত্র স্ক্যান করে অনলাইন আবেদনের সঙ্গে আপলোড করতে হবে। প্রাথমিক আবেদনের পর যোগ্যতার ভিত্তিতে তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং যোগ্যতার তালিকা অনুযায়ী ফোন ইন্টারভিউয়ের জন্য আমন্ত্রিত করা হবে। ইন্টারভিউ তিন মিনিট দীর্ঘ হবে। সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত ফল শুধু যোগ্যপ্রার্থীদের পাঠানো হবে।
ফোন ইন্টারভিউ থেকে বাছাইকৃত সীমিতসংখ্যক প্রার্থীকে ইএলটিআইএস (ELTiS) পরীক্ষা ও ইন-ক্লাস প্রবন্ধ-রচনায় অংশ নিতে হবে। ইএলটিআইএসের দুটি অংশ রয়েছে—লিসেনিং (২৫ মিনিট) এবং রিডিং (৪৫ মিনিট)। ইন-ক্লাস প্রবন্ধ-রচনায় অংশ নেওয়া আবেদনকারীদের তিনটি প্রবন্ধ রচনা তৈরি করতে হবে। প্রতিটির জন্য সময় থাকবে ১৫ মিনিট।
চূড়ান্ত আবেদন ও সাক্ষাৎকার:
ইএলটিআইএস পরীক্ষা এবং ইন-ক্লাসের প্রবন্ধ রচনা পরীক্ষার সাফল্য অর্জনকারীরা চূড়ান্ত আবেদন জমা দেবে। তারা যোগ্য বিবেচিত হলে চূড়ান্ত আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানানো হবে। যেসব আবেদনকারী চূড়ান্ত আবেদনপত্র জমা দেবে, তাদের চূড়ান্ত সাক্ষাৎকারের জন্য আমন্ত্রণ করা হবে। নির্বাচনপ্রক্রিয়া ২০২৩ সালের জানুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। চূড়ান্ত সাক্ষাৎকারের পর ইয়েস প্রোগ্রাম থেকে চূড়ান্ত ও অল্টারনেটদের তালিকা ঘোষণা করা হবে। নির্বাচিত আবেদনকারীদের অবহিত করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার আগে এনহেন্সমেন্ট অ্যাকটিভিটি, পিডিও এবং ট্রাভেল ওরিয়েন্টেশনে অংশগ্রহণ করতে হবে। উভয় ওরিয়েন্টেশনই প্রোগ্রামের জন্য বাধ্যতামূলক।
ইয়েস প্রোগ্রামের বিস্তারিত এবং আবেদনের বিস্তারিত নির্দেশাবলি জানা যাবে এ ওয়েবসাইটে। এ ছাড়া ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের ইয়েস প্রোগ্রাম ম্যানেজার মুশফিক হাসানের ই-মেইল [email protected] বা [email protected] ঠিকানায় মেইলে যোগাযোগ করা যাবে।
আবেদনের শেষ সময়-আগামী ১৫ নভেম্বর ২০২২।