রেকর্ড গড়ে, রেকর্ড ভাঙে। ভাঙা-গড়ার সেই খেলা দেখা যাবে আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও।
সাকিব আল হাসান, রোহিত শর্মা, জস বাটলার, ডেভিড ওয়ার্নারদের হাতছানি দিচ্ছে নতুন রেকর্ড। আলোচনার বাইরে থাকা কেউও এসে গড়তে পারেন নতুন রেকর্ড। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং— এই তিন বিভাগে এবারের আসরে ভেঙে যেতে পারে এমন রেকর্ডগুলো একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
সর্বোচ্চ রান: রোহিত-কোহলির হুমকিতে জয়াবর্ধনে
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে। ৩১ ম্যাচ খেলে সাবেক লঙ্কান অধিনায়কের রান ১ হাজার ১৬। তালিকায় ৯৬৫ রান নিয়ে দুইয়ে ক্রিস গেইল, ৮৯৭ রান নিয়ে তিনে তিলকারত্নে দিলশান। তিনজনের কেউই এবার খেলছেন না।
তাঁদের টপকে যাওয়ার সুযোগ ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির সামনে। ৩৩ ম্যাচ খেলা রোহিতের রান এখন ৮৪৭। ৮৪৫ রান নিয়ে তাঁর ঠিক পেছনে কোহলি। ৩০ ম্যাচে ৭৬২ রান করা ওয়ার্নারও আছেন লড়াইয়ে।
সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি: গেইলের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই ইংলিশ
আগের সাত আসরে সেঞ্চুরি হয়েছে মোটে ৮টি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২টি সেঞ্চুরি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইলের। এক সেঞ্চুরি করা বাকি ছয় ব্যাটসম্যানের দুজন খেলছেন এবারের আসরে। দুজনই ইংল্যান্ডের—অ্যালেক্স হেলস ও জস বাটলার। তবে এবারই কেউ দুই সেঞ্চুরি করে ফেললেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
সর্বোচ্চ ফিফটি: কোহলির হুমকি রোহিত
টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করাটা কঠিন, তবে তুলনামূলক সহজ ফিফটি করা। পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংসে শীর্ষে এখন কোহলি। ২১ ম্যাচে ১০ ফিফটি তাঁর। এই রেকর্ডে কোহলির জন্য হুমকি তাঁর সতীর্থ ও ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা, তাঁর ফিফটি ৮টি। অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ওয়ার্নারের আছে ৬ ফিফটি।
এক আসরে সর্বোচ্চ রান: কোহলি-বাবরের লড়াই
সাত আসরের মধ্যে দুবার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন কোহলি। ২০১৬ আসরে ২৭৩ রান, ২০১৪ আসরে ৩১৯ রান। বাংলাদেশে হওয়া ২০১৪ আসরের ওই রানই এখন পর্যন্ত এক আসরে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ। গত বছর কোহলির খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের বাবর আজম। ৬ ম্যাচ খেলে তুলেছিলেন ৩০৩ রান। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের লড়াইটা এবারও হতে পারে কোহলি-বাবরের মধ্যে।
সর্বোচ্চ উইকেট: সাকিবের প্রতিদ্বন্দ্বী কই
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৪১ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে সাকিব আল হাসান। এরপর দুই থেকে নয় পর্যন্ত যাঁরা আছেন, তাঁদের কেউই এবারের বিশ্বকাপে নেই। সাকিবের রেকর্ড ভাঙার পথে কাছাকাছি প্রতিদ্বন্দ্বী দশে থাকা রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
ভারতীয় অফ স্পিনার ১৮ ম্যাচে নিয়েছেন ২৬ উইকেট। তারপর আছেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক (২৪) আর নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদিরা (২২)। তবে সাকিবকে টপকাতে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হবে তাঁদের।
ম্যাচে ৪ উইকেট: সাকিবের টপকে যাওয়ার পালা
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত মাত্র দুজন বোলার ৩টি ম্যাচে ৪ বার তাঁর বেশি উইকেট নিতে পেরেছেন। একজন পাকিস্তানের সাঈদ আজমল, অপরজন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। আজমল অবসর নিয়েছেন আগেই। সাকিবের সামনে এখন এককভাবে শীর্ষে উঠে যাওয়ার সুযোগ।
এ ছাড়া ২টি ম্যাচে চার বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব আছে পাঁচ বোলারের। ওই পাঁচজনের মধ্যে বিশ্বকাপে আছেন শুধু বাংলাদেশের মোস্তাফিজুর রহমান।
এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট
এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১৬ উইকেট নিয়েছিলেন লঙ্কান এ স্পিনার। ওই আসর হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্পিনবান্ধব উইকেটে। এবার হাসারাঙ্গাকে টপকে নতুন রেকর্ড গড়তে পারেন পেসারদের কেউ।
সর্বোচ্চ ক্যাচ: ডি ভিলিয়ার্সকে ধরে ফেলার পথে গাপটিল-ওয়ার্নার
৩০ ম্যাচে ২৩ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্সের। ১৯ ক্যাচ নিয়ে তার পেছনেই নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল। শুধু গাপটিলই নন, ডি ভিলিয়ার্সকে টপকে যাওয়ার সুযোগ ১৮ ক্যাচ নিয়ে তিনে থাকা ওয়ার্নারেরও। ভারত অধিনায়ক রোহিতের আছে ১৫ ক্যাচ।
উইকেটরক্ষকের ক্যাচ: সেরার দৌড়ে কেউ নেই
উইকেটের পেছনে ৩৩ ম্যাচে ৩২ ডিসমিসাল নিয়ে সবার ওপরে সাবেক ভারত অধিনায়ক এম এস ধোনি। তিনি অবসর নিয়েছেন আগেই। তবু ধোনির শীর্ষস্থান নিরাপদই বলা চলে। দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ স্থানে থাকা কোনো উইকেটরক্ষকই যে এবার খেলছেন না।
যাঁরা খেলছেন, তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ ডিসমিসাল দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি ককের। অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার ম্যাথু ওয়েডের ডিসমিসাল ১৪টি। শীর্ষে না উঠতে না পারলেও সেরা পাঁচে ঢোকার সুযোগ আছে তাঁদের সামনে।
এক আসরে সর্বোচ্চ ডিসমিসাল: দৌড়ে সবাই
এখন পর্যন্ত কোনো উইকেটকিপারই বিশ্বকাপের এক আসরে ১০টি ডিসমিসাল করতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৯টি করে ডিসমিসাল করতে পেরেছেন ডি ভিলিয়ার্স, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, কামরান আকমাল, কুমার সাঙ্গাকারা ও ম্যাথু ওয়েড।
এবার ১০ ডিসমিসালের মাইলফলক স্পর্শের সুযোগ থাকছে সব উইকেটকিপারের জন্যই। তবে ফাইনালে ওঠা দলগুলোর উইকেটকিপারের জন্য সম্ভাবনাটা বেশি।