আজ সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে আন্টির কথা (অপুর মা)। আজ বেঁচে থাকলে তিনি এই অনুষ্ঠানে আসতেন। তাঁর মেয়ের এই সফলতা দেখে খুব খুশি হতেন তিনি। কথাগুলো বলছিলেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। শনিবার রাতে লাল শাড়ি ছবির মহরত অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন ঢাকাই ছবির এই অভিনেত্রী। অপু-জয় চলচ্চিত্রের প্রথম প্রযোজিত ছবি হবে এটি।
নিপুণ যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন পাশেই বসেছিলেন অপু বিশ্বাস। নিপুণের কথায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন অপু। একপর্যায়ে কেঁদেও ফেলেন। সে সময় বারবার চোখ মুছতে দেখা গেছে অপু বিশ্বাসকে।
নিপুণ আরও বলেন, আমার প্রথম সিনেমাতে অপুও অভিনয় করেছিলেন। আন্টি শুটিংয়ে সব সময় আমাদের সঙ্গে থাকতেন। যেহেতু আমার নাম নিপুণ, সেটে সবাই বলতেন অপু ও নিপুণ দুই বোন। আন্টিও সবাইকে বলতেন, অপু ও নিপুণ—আমার দুই মেয়ে। যাহোক, আন্টিও নিশ্চয়ই কোনো অজানা থেকে তাঁর মেয়ের জন্য এই দিনে আশীর্বাদ করছেন। অপুর এই প্রথম পথচলা সফল হোক, সেই কামনা করি আমরা।
অপু বিশ্বাসের মা শেফালি বিশ্বাস ২০২০ সালে মারা যান। মারা যাওয়ার বেশ আগে থেকেই মেয়ে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসকে সিনেমা প্রযোজনায় উৎসাহিত করে আসছিলেন। ছবির মহরত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে সেসব কথা মনে করে আবেগপ্রবণ হয়ে অপু বিশ্বাস বলেন, আমি কোনো দিন সিনেমা প্রযোজনায় আসতে চাইনি। কিন্তু আমার মায়ের অনেক বেশি আগ্রহ ছিল। অপু-জয় চলচ্চিত্র হাউসটির নামও মায়ের দেওয়া। মা বলতেন প্রথম ছবিটি অবশ্যই যেন সরকারের অনুদানে করি। আবেদন করেছিলাম। সরকার আমাকে এই ছবিতে অনুদান দিয়েছে। কিন্তু যার সবচেয়ে বেশি তাগিদ ছিল, তিনিই আজ নেই। তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো দেখে যেতে পারতেন। তাঁর ইচ্ছাপূরণ হতো। তবে তাঁর আশীর্বাদ নিশ্চয়ই আমাদের সবার জন্যই আছে।
অপুর কথা, আজকের আপনাদের অপু বিশ্বাসের সবকিছুই মায়ের অবদান। শুধু আমার নন, যেকোনো মানুষের সফলতার পেছনে মায়ের ভূমিকা বেশি থাকে। মাকে স্মরণে রেখেই আমি এই ছবির কাজ এগিয়ে নেব। আমার বিশ্বাস, এই কাজে মা আমার পাশে অদৃশ্যভাবে ছায়া দিয়ে যাবেন।
সবার সহযোগিতায় একটি সুন্দর সিনেমা উপহার দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে অপু বিশ্বাস আরও বলেন, ‘আমার ডাকে সাড়া দিয়ে আজ চলচ্চিত্রের অনেক গুণীজন এখানে এসেছেন। পাশাপাশি আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরাও এসেছেন। তাঁদের কাছে আমার একটাই আবেদন, আপনাদের অপু বিশ্বাসের ওপর যে বিশ্বাস, আস্থা আপনাদের আছে, আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমি সেই বিশ্বাসের দাম রাখতে চাই। সবাইকে একটা সুন্দর সিনেমা উপহার দিতে চাই।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান, সাবেক সভাপতি মুশফিকুর রহমান, ছবিটির পরিচালক বন্ধন বিশ্বাস। এ ছাড়া ছবির কলাকুশলীদের মধ্যে বক্তব্য দেন শহীদুজ্জামান সেলিম, সাইমন সাদিক, দিলরুবা দোয়েল, সুমিত সেনগুপ্ত, ডন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে পরিচালক জানান, আগামী নভেম্বর থেকে ঢাকার বাইরে ছবিটির শুটিং শুরু হবে।
একসময় এ দেশে দারুণ সমৃদ্ধ ছিল তাঁতশিল্প। সেই শিল্প দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। সেই বিষয়কে গল্পে উপজীব্য করেই লাল শাড়ি ছবির কাহিনি তৈরি হয়েছে। ছবিটির কাহিনি ও সংলাপ লিখেছেন তানভির সিডনী। চিত্রনাট্য করেছেন পরিচালক নিজেই।