ভারতে এমন একটি স্কুল রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১ জন। একজন শিক্ষার্থীকে পড়ানোর জন্য রয়েছেন একজন শিক্ষক। তিনিই ওই শিক্ষার্থীকে সমস্ত বিষয় পড়ান। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও, এটাই সত্যি। এই স্কুলটি রয়েছে মহারাষ্ট্রের একটি গ্রামে। সেখানে একজন শিক্ষার্থীর জন্যই চালু রাখা হয়েছে স্কুল।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের ওয়াসিম জেলার সবথেকে ছোট গ্রাম হল গণেশপুর। এই গ্রামে জনসংখ্যা মাত্র ২০০। গ্রামে রয়েছে একটিই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। কিন্তু যেখানে গ্রামের জনসংখ্যাই ২০০, সেখানে খুদে শিক্ষার্থী আর কয়জনই থাকবে। বর্তমানে প্রাথমিক স্কুলটিতে ৮ বছর বয়সি কার্তিক সেগোকার নামে একজনই শিক্ষার্থী রয়েছে।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একমাত্র শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হয়নি কার্তিককে। শুধুমাত্র তার জন্যই চালু রাখা হয়েছে প্রাথমিক স্কুল। সেখানে তাকে পড়ান একজন শিক্ষক। একটি স্কুলে যা যা নিয়ম পালন করা হয়, তা সমস্ত কিছুই অনুসরণ করা হয় এই স্কুলে।
সকালে স্কুল শুরু হয় জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে, এরপরে প্রার্থনার পর ঘড়ি ধরে ক্লাস শুরু হয়। এছাড়ও স্কুলে যাবতীয় সরকারি পরিষেবা পাওয়া যায়। এমনকী কার্তিকের জন্য মিড-ডে মিলের ব্যবস্থাও রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কার্তিক নামে ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। তাকে যিনি পড়ান, তার নাম কিশোর মানকর। তিনি প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে স্কুলে আসেন শুধুমাত্র কার্তিককে পড়াতে।
কিশোর মানকর জানিয়েছেন, বিগত দুই বছর ধরে স্কুলের একমাত্র শিক্ষার্থী কার্তিক। গ্রামে তার বয়সী অন্য কোনও নাবালক না থাকায়, তাকেই স্কুলে একা সমস্ত বিষয় পড়ান তিনি। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষাও হয়।
উল্লেখ্য, ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে স্কুল শিক্ষা নিয়ে হাজারো অভিযোগ রয়েছে। কোথাও পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষার্থী নেই, কোথাও আবার শিক্ষার্থী থাকলেও অভাব রয়েছে শিক্ষকের। এরমধ্যেই এই স্কুলটি এক অনন্য নজির গড়ল।