27 C
Dhaka
শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪

আপনি কি পাপকে তুচ্ছ মনে করছেন? জেনে নিন এর ভয়াবহতা

লেখক থেকে আরো

আল্লাহর বিধানের বিপরীত কাজই পাপ। এ পাপকে অবহেলা করা বা কোনো কিছু মনে না করা কিংবা সাধারণ বিষয় মনে করা গুনাহের কাজ। তাই পাপের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অনেকেই আছেন, যারা পাপকে তুচ্ছ মনে করে। পাপ বা গুনাহকে তুচ্ছ মনে করা যাবে কি?

কেরামান কাতেবিন (সম্মানিত দুই লেখক) আমাদের কারো গুনাহ লেখার আগে আল্লাহ আমাদের তওবার ব্যাপারে অনেক সুযোগ দিয়েছেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই ভুলকারী মুসলিম বান্দার জন্য বামপাশের ফেরেশতা ছয় ঘন্টা পর্যন্ত কলম উঠিয়ে রাখে। বান্দা যদি অনুতপ্ত হয় এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তাহলে তা মাফ করে দেওয়া হয়, নতুবা একটি গুনাহ লেখা হয়। (তাবারানি, বায়হাকি)

বর্তমান সময়ে মানুষ আল্লাহকে ভয় করে না, রাতদিন বিভিন্ন গুনাহ করে চলেছে। এদের কেউ কেউ আবার গুনাহ কিছুই মনে করে না। তাদের কাছে গুনাহ একেবারেই তুচ্ছ। কেউ কেউ ছোট গুনাহকে খুবই তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখে থাকে। যেমন বলে থাকে, একবার খারাপ কিছু দেখলে কিংবা কোন বেগানা নারীর সঙ্গে করমর্দন করলে ক্ষতি কী?

আবার অনেকেই আগ্রহ ভরে হারাম জিনিসের দিকে নজর দেয়। পত্র-পত্রিকায় বা টিভি সিরিয়াল বা সিনেমার দিকে; এমনকি এদের কেউ কেউ যখন জানতে পারে যে এটি হারাম, তখন খুবই রসিকতা করে প্রশ্ন করে, এতে কত গুনাহ রয়েছে? এটি কি কবিরা গুনাহ নাকি সগিরা গুনাহ? অথচ এ কথাগুলো কত মারাত্মক। যা তুলনাই করা যায় না। ইমাম বুখারি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির এই হাদিস দুটি পড়ুন-

১. হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘তোমরা এমন সব কাজ কর যা তোমাদের দৃষ্টিতে চুলের চেয়েও সূক্ষ্ম। কিন্তু আমরা রাসুলুল্লাহর যুগে এগুলোকে মনে করতাম ধ্বংসকারী।’

২. হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, একজন মুমিন গুনাহকে এভাবে দেখে থাকে যে, সে যেন এক পাহাড়ের নিচে বসে আছে যা তার মাথার উপর ভেঙ্গে পড়বে। পক্ষান্তরে পাপী তার গুনাহকে দেখে যেন মাছি তার নাকের ডগায় বসেছে, তাকে এভাবে তাড়িয়ে দেয়।

মানুষ গুনাহ করবেই। আর গুনাহের কারণেই বান্দা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। এমন একটি বর্ণনাও এসেছে হাদিসে। তাহলো-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যার হাতে আমার জীবন! যদি তুমি পাপ করতে না পারো তবে আল্লাহ তোমাকে অস্তিত্ব থেকে সরিয়ে নেবেন এবং তিনি এমন লোকদের দেবেন যারা পাপ করবে এবং আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা চাইবে এবং তিনি তাদের ক্ষমা করে দেবেন।’ (মুসলিম)

সে কারণে কেউ যদি পাপ বা গুনাহ করে তবে তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে। কোরআনের বর্ণনায় বিষয়টি এভাবে এসেছে-

رَبَّنَا فَاغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوۡبَنَا وَ کَفِّرۡ عَنَّا سَیِّاٰتِنَا وَ تَوَفَّنَا مَعَ الۡاَبۡرَارِ

‘হে আমাদের রব! তুমি আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা কর, আমাদের মন্দ কাজসমূহ গোপন কর এবং মৃত্যুর পর আমাদেরকে পুণ্যবানদের সাথে মিলিত কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯৩)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, গুনাহ নিয়ে অবজ্ঞা কিংবা তুচ্ছ মনে করা কোনোভাবেই উচিত নয়। গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকা খুবই জরুরি। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পেতে গুনাহমুক্ত জীবন গড়ে দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখার বিকল্প নেই।

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক সংবাদ